যখন ক্রোধের অনলে স্নেহের অপমৃত্যু ঘটে

প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭ সময়ঃ ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:১৯ অপরাহ্ণ

রাগের আগুন যখন দাউ দাউ করে জ্বলতেই থাকে তখন তা ক্ষোভে পরিণত হয়। ক্ষোভের লেলিহান শিখা যখন দ্বিগবিদিগ ছড়িয়ে পড়ে তখন হৃদয়ের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়। জন্ম হয় এক পাষাণ সিমারের; যার কাছে পাহাড়ের নিশ্চুপ গাম্ভীর্য, বজ্রের নিষ্ঠুরতা, অনলের প্রখর দহন হার মেনে যায়। তখন ঈগলের ক্ষিপ্রতা, চিলের নিষ্ঠুরতা ভর করে মস্তিস্কের নষ্ট অন্ধ কুঠোরে। সেখান থেকে উৎপন্ন হয় ধ্বংস মানসপট। যার পরিণামে আগম ঘটে আজরাইলের।

এখানে জানের বদলে ইনসানিয়াতের পুনরাগম ঘটে, লহুর বদলে রুহের পুনর্জাগরণ। এভাবেই শেষ থেকে আবার শুরু হয় বড় নির্মম-নিষ্ঠুরভাবে। শীতের ঝড়া পাতারা উড়ে উড়ে কোন বনে লুকিয়ে যায় বসন্তের দখিনা বাতাসের প্রতাপে। তবে বহু দিন বহু বছর বহু যুগ বহু শতাব্দি পেরিয়ে সেই নিষ্পাপ রুহের করুণ কান্না যেন আবার শোনা যায়। ছড়িয়ে দিয়ে যায় সহস্র লক্ষ কোটি প্রাণে।

আবার জেগে উঠে সেই স্বর্ণখচিত সুবর্ণ দিন-প্রসাদ-প্রাণের চাঞ্চল্য। সত্য উদ্ভাসিত হয়ে মিথ্যাকে অপমানের আঘাতে জর্জরিত করে, ধিক্কার জানায়। আফসোসের নির্ভেজাল আর্তি গুমরে গুমরে মরে আবার জেগে উঠতে চায়। হায় রাজনীতি, এখানে রক্তের মাতম না হলে রাজ্য গড়ে উঠে না।

এখানে হিংসার বীজ না থাকলে সফল চারা গজায় না। এখানে ধ্বংস লীলায় মেতে না উঠলে সৃষ্টির উল্লাস জমে উঠে না। হায় ইতিহাস, এত সত্য দিয়ে নির্মাণ করা হাহাকারের প্রাসাদ দেখেও শিক্ষা হয় না। যুগে যুগে রাজা নীতিহীন হয়েই রাজ্যের নীতি নির্ধারণ করে। এজন্যই স্নেহের মৃত্যু হয়; দাম্ভিকতার আঁচড়ে। ইতিহাস কলঙ্কিত হয় ভুলুণ্টিত অবিবেচকের হাতে। এই রাজনীতি, এই ইতিহাস চলছে, চলবে। এই আমাদের নিয়তি।

শারমিন আকতার
লেখক: সাংবাদিক

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G